জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) উল্লেখ থাকা বয়স সংশোধনের কাজ এতদিন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠপর্যায়ে করা গেলেও এখন থেকে এসংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। ফলে বয়স সংশোধনের এই ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছেন মাঠপর্যায়ের ইসি কর্মকর্তারা।
ইসি সূত্র জানায়, গত রোববার নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর নেতৃত্বে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সংশোধন নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে এনআইডির বয়স সংশোধন নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। মামলা ও অপরাধ করে অনেকেই বয়স সংশোধনের আবেদন করে থাকেন বলে অভিযোগ আসে বৈঠকে। ফলে মাঠ পর্যায়ে বয়স সংশোধনের কার্যক্রম বন্ধ করে তা শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব আসে বৈঠকে। এ বিধান যুক্ত হলে উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বয়স সংশোধনের কার্যক্রম বন্ধ হবে এবং তারা এ সংক্রান্ত ক্ষমতাও হারাবেন। তবে বৈঠকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ও সংশোধন কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিষয়ে আলোচনা হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি। এনআইডি সেবা আরও সহজতর করার বিষয়েও নানা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে।
জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ.এস.এম. হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বিষয়টি কমিশনের কাছে উপস্থাপন করব, তারপর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’
বর্তমানে ছয় ক্যাটাগরিতে (ক-১, ক, খ-১, খ, গ ও ঘ) এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নয় বছর পর্যন্ত বয়স সংশোধন করতে পারেন। আর নয় বছরের বেশি হলে তা কেন্দ্রীয়ভাবে সংশোধন করা হয়। তবে নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের এসওপি সংশোধন করে যদি বয়স সংশোধন কেন্দ্রীয়ভাবে করার বিধান যুক্ত হয়, তাহলে মাঠ পর্যায়ে বয়স সংশোধনের আর কোনো কার্যক্রম থাকবে না।
সূত্র জানায়, দীর্ঘ সময় ধরে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ এনআইডি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে এখন থেকে এনআইডি সংশোধনে আরও কঠোর অবস্থান নেবে ইসি।
এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, ‘নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে আমরা ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ আবেদন নিষ্পত্তি করেছি। কিন্তু ডাটাবেজের তথ্য ইউনিক রাখতে হলে এনআইডি সংশোধনে আমাদের কঠোর হতে হবে। আমরা সেই পরিকল্পনা করছি।’

