এবার ১২০০ কেজির ‘রাজা বাহাদুর’ কাঁপাবে কোরবানির হাট

১০ জুন, ২০২৪ | ১০:০৭ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার , দৈনিক টেলিগ্রাম

কোরবানি ঈদে শেরপুরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ১ হাজার ২০০ কেজি ওজনের ‘রাজা বাহাদুর’ নামে একটি গরু। যার খাবারের তালিকায় রাখতে হয় আপেল-কলাসহ পুষ্টিকর খাবার। ওজন, আকৃতি ও সৌন্দর্য চোখ ধাঁধানো হওয়ায় তাকে দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের মানুষেরা। তারা বলছেন, জেলার সবচেয়ে বড় গরু এটি। আর গরুর মালিকের আশা, ১৪ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন শখের গরুটি। কাঁচা ঘাস, খড়, ভুসি, ভুট্টার গুঁড়া ও খৈল ছাড়াও খাবারের তালিকায় রাখতে হয় আপেল-কলাসহ পুষ্টিকর খাবার। আর প্রতিদিন গোসল করাতে হয় ৩-৪ বার। গরুর মালিক শফিকুল ইসলাম দাম হাঁকিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। জানা যায়, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাগেরভিটা বেপারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হলেও তার শখ ছিল বড় গরু পালনের। এজন্য তার বড় ভাই শামসুল হকের খামার থেকে তিন বছর আগে একটি আমেরিকান ডেইরির হলিস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের বাছুর নেন তিনি। এরপর পরম মমতায় বেড়ে উঠা বিশালদেহের গরুটির চলন-বলন ও আয়েশি খাবারের জন্য আদর করে নাম রাখেন ‘রাজা বাহাদুর’। ১০ ফুট লম্বা ও প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার সাদা-কালো রঙের গরুটির ওজন ১ হাজার ২০০ কেজি। গরু বাজারে তোলার জন্য প্রস্তুতি নিলেও বাধা তার ওজন। তবে অনেক ক্রেতা ইতোমধ্যে বাড়িতে এসে দরদাম করছেন। তার আশা, বাজারের সেরা এই গরুটি হয়তো বাড়িতেই বিক্রি হয়ে যাবে। শফিকুল ইসলামের ভাবী মোর্শেদা বেগম গরুটি মূল লালন-পালনের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, নিজের সন্তানের মতো করে গরুটি লালন পালন করেছি। আমার আওয়াজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে মাথা নারায়। সবার সঙ্গে রাগের ভাব দেখালেও আমি আসলে শান্ত হয়ে যায়। গরুটি বিক্রি করতে হবে মনে হলেই চোখের পানি চলে আসে আমার। গরুটি বেশি ওজন হওয়ায় বাইরে বের করা অনেক কষ্টের। আমরা গরুটি বাইরে বের করি না। কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ জন মানুষ লাগে গরুটি নিয়ন্ত্রণ করতে। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার পাঁচটি উপজেলার ছোট বড় প্রায় ১৩ হাজার ৭৩১ জন খামারি রয়েছেন। এছাড়াও অনেক পরিবার ব্যক্তিগতভাবে গরু মহিষ ও ছাগল পালনের সঙ্গে জড়িত। এবার কোরবানির জন্য শেরপুর জেলায় ৫১ হাজার ২২৫টি পশুর চাহিদা থাকলেও প্রস্তুত হয়েছে ৮৩ হাজার ৮০২টি পশু। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩২ হাজার বেশি। পশুগুলো হলো, ৪০ হাজার ২৭০টি ষাঁড়, ২ হাজার ৮৬৫টি বলদ, ১৩ হাজার ৭৯৪টি গাভী, ১ হাজার ৩৮৬টি মহিষ, ২২ হাজার ৩৯টি ছাগল, ৩ হাজার ৪৪৮টি ভেড়া। প্রস্তুত করা এসব পশু নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাইরে হাটবাজারগুলোতে বিক্রি হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া জানান, কোরবানির পশুকে অসদুপায়ে মোটা তাজা না করার জন্য আমরা বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা হয়েছে। তবে বড় গরুগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বড় গরু পরিবহনের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম কানুন রয়েছে। তাই যাদের বড় গরু রয়েছে তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।