ডিজেল ও চাল আমদানিতে শুল্ক কমেছে।

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ আগস্ট, ২০২২ | ২:০৫
ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৯ আগস্ট, ২০২২ | ২:০৫
Link Copied!

দেশের বাজারে দাম বাড়তে থাকার মধ্যে চাল আমদানিতে বড় ধরনের শুল্ক সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশ থেকে ডিজেল আনার ক্ষেত্রেও শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার।

রোববার এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মুহা. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত দুটি আলাদা পরিপত্রে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়ে যাওয়া এ দুই আমদানি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

ডিজেল এবং সুগন্ধি ছাড়া সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানিতে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে। তবে চাল আমদানির জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে এনবিআরের (কাস্টমস নীতি) সদস্য মাসুদ সাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের ওপর পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এনবিআর এই পরিপত্র জারি করেছে। হতে পারে এটা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কিংবা খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে।”

প্রজ্ঞাপনে ডিজেল আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর পাশাপাশি সব ধরনের অগ্রিম কর তুলে নেওয়া হয়েছে।

এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, ডিজেলে সব মিলে প্রায় ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আমদানি শুল্ক ২২ দশমিক ৭৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ডিজেল আমদানিতে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক, অগ্রিম কর ও অন্যান্য করসহ মোট ৩৪ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হত।

ডিজেলের আগাম কর অব্যাহতি ও আমদানি শুল্ক কমানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “কাস্টমস আইন ১৯৬৯ অনুযায়ী ডিজেল আমদানিতে আগাম কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।”

এর আগে ১০ মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর উচ্চ হারের আমদানি শুল্ক থাকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। তখন শুল্ক কমিয়ে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পরামর্শ এসেছিল।

<div class=”paragraphs”><p>ঢাকায় কেনার আগে চাল হাতে নিয়ে দেখছেন এক ক্রেতা। ফাইল ছবি।</p></div>
ঢাকায় কেনার আগে চাল হাতে নিয়ে দেখছেন এক ক্রেতা। ফাইল ছবি।
এদিকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে দেশের বাজারে বাড়তে থাকা চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি উৎসাহিত করতেও বড় ধরনের শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে চাল আমদানিতে মোট নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক মোট ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

তবে চালের ক্ষেত্রে আগাম কর ও অগ্রিম আয়কর বহাল থাকায় এখন মোট ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এর আগে জুনে এক দফায় শুল্ক কমানো হয়েছিল।

দুই দফায় শুল্ক ছাড়ের আগে চাল আমদানিতে সব ধরনের কর মিলিয়ে মোট সাড়ে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিতে হত। দেশের কৃষকের কথা বিবেচনায় জুনের আগে পর্যন্ত চাল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞাও ছিল।

পরে স্থানীয় বাজারে চালের দাম বাড়তে শুরু করলে জুনে শুল্ক কমিয়ে আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার।

এর আগে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে সরকার গত ৬ অগাস্ট কেরোসিন ও ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা ও অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়ায়। ভোক্তাপর্যায়ে খুচরা মূল্য প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪, পেট্রল ১৩০ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা করা হয়।

জ্বালানি তেলের বিশেষ করে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে চালসহ সব পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা এল। এর আগে চালের শুল্ক কমিয়ে আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার।

চালের শুল্ক অব্যাহতি ও রেগুলেটরি ডিউটি কমানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শর্ত সাপেক্ষে চাল আমদানিতে আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেদ্ধ চাল ও আতপ চাল (সেদ্ধ নয়) আমদানিতে এ সুবিধা পাওয়া যাবে।

চাল আমদানিতে এ রেয়াতি সুবিধা নিতে হলে আমদানির আগে প্রত্যেক চালানের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনের শর্ত দেওয়া হয়।

এর আগে চলতি বছরের ২২ জুন শর্ত সাপেক্ষে চালের আমদানিতে শুল্ক অব্যাহতি এবং রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তখন রেয়াতি এ শুল্ক সুবিধা চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকার কথা বলা হয়েছিল।

রোববারের প্রজ্ঞাপনে আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরও কমিয়ে এবার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।

ট্যাগ: