আবিদ হাসান
মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর এর বিরুদ্ধে লুট হওয়া উদ্ধারকৃত স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা ফেরৎ না দিয়ে বাদীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
১২ জানুয়ারি (রোববার) জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন সিংগাইর উপজেলার চর আজিমপুর গ্রামের মোঃ কাজী গোলাম হোসেনের ছেলে কাজী আরিফুর রহমান (৩৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারীর ছোট ভাই কাজী শরিফুর রহমান (৩৪) বিগত প্রায় নয় বছর পূর্বে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক উপজেলার চর দূর্গাপুর
গ্রামের সিদ্দিক খানের মেয়ে চাদনী আক্তার (২৬) কে বিয়ে করে। দম্পত্য জীবনে তাদের সংসার রয়েছে কাজী আবদুল্লাহ্ নামের সাত বছরের এক পুত্র সন্তান। জীবন জীবিকার তাগিতে কাজী শরিফুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ সৌদী আরবে কর্মরত ছিলেন। ১ জানুয়ারি তিনি একমাসের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। তিনি বাড়ি আসার পর ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটার দিকে কাজী শরিফুর রহমান বাড়ীতে না থাকার সুযোগে স্ত্রী চাদনী আক্তার অজ্ঞাত এক যুবকের প্ররোচনা ও সহযোগিতায় বিদেশ থেকে স্বামীর দেয়া ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৯,৬০,০০০/- (নয় লক্ষ ষাট হাজার টাকা) এবং কাজী শরিফুর রহমানের ব্যক্তিগত ও তার সহকর্মীদের বাড়িতে পাঠানোর টাকাসহ মোট ৪৫ হাজার রিয়াল যাহার মূল্য ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ব্যবহৃত ২টি স্মার্টফোন যার মূল্য আনুমানিক ৬০ হাজার টাকা নিয়ে ছেলে একমাত্র পুত্র সন্তান আব্দুল্লাহকে পালিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি পর সন্ধান না পেয়ে অবশেষে ওই দিনই সিংগাইর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ওসি জাহাঙ্গীর অভিযোগ না নিয়ে উল্টো স্ত্রী চাদনী আক্তারকে খুন করে লাশ গুম করার অভিযোগে স্বামীর পরিবারকে গ্রেফতারের ভয়ভীতি দেখান। পুলিশকে চাদনী আক্তারের মোবাইল নাম্বার দিয়ে ট্র্যাকিং করে দেখার জন্য ওসিকে অনুরোধ করা হয়। এইভাবে নানারকম ভয়ভীতি দেখাতে দেখাতে ৫ দিন অতিবাহিত হলে ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর-এর সহযোগতিায় পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি রাত দেড়টার সাভার থানার বিরুলিয়া পাঁচতলা একটি ভবন থেকে চাদনী আক্তারসহ তার প্রেমিক অজ্ঞাত সেই ছেলেকে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
বাদির উপস্তিতিতেই চাদনী আক্তারের নিকট থেকে লুট করা টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন ওসি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।
পরবর্তীতে চাদনী আক্তার ও অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবককে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ওসি মামলা না নিয়ে থানায় বিভিন্ন সময়ের পেন্ডিং মামলায় ভুক্তভোগী কাজী আরিফুর রহমান পরিবারকে গ্রেফতারের ভয় ভীতি দেখায়।
জব্দকৃত স্বর্ণালঙ্কার, নগদ বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাতের করে মামলা না নিয়ে চাদনী ও তার কথিত প্রেমিককে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় ওসি। বরং আসামীদের পক্ষ নিয়ে হেনেস্তা করতে বাদি পরিবারকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে সিংগাইর থানার ওসির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। রিং হলে তিনি লাইনটি বার বার কেটে দেন।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোছাঃ ইয়াছমিন খাতুন জানান, আমি অফিসিয়ালি অভিযোগের কপি হাতে পায়নি। তবে মৌখিকভাবে বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষ পরবর্তীতে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।