মো:নোমান আহম্মেদ
মানিকগঞ্জ জেলা জুড়ে শিশুদের টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে প্রতিদিন জেলা ও উপজেলা সরকারি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে টিকা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন শিশুদের মা ও স্বজনেরা। সাধারণত জন্মের পর শিশুর বয়স ৪৩ দিন পূর্ণ হলে প্রথম ডোজ এবং বিভিন্ন মেয়াদে ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২৩ মাসের মধ্যে শিশুদের ৭ ধরনের টিকা দিতে হয়।
গতকাল সকালে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ঘুরে টিকার এমন সংকট দেখা যায়।
মানিকগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে , টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় জন্মের পর থেকে ২৩ মাস বয়সের মধ্যে ১০টি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে শিশুদের ৭ ধরনের টিকা দেওয়া হয়। টিকাগুলো হলো বিসিজি, ওপিডি বা পোলিও, আইপিভি, পিসিভি, পেন্টা ভ্যালেন্ট, এমআর-১ ও এমআর-২। কিন্তু গত ডিসেম্বর থেকে পিসিভি, পেন্টা ভ্যালেন্ট যথাযথ পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলা হাসপাতালে টিকা প্রদানকারী জাহাঙ্গীর আলম বাঁধন বলেন, এক মাস যাবত আমাদের কাছে পেন্টা ভ্যালেন্ট টিকা নেই। বর্তমানে প্রথম ডোজের ৪ টি টিকার মধ্যে ৩ টি দিচ্ছি এবং বাকি টিকাটা আসার পর দিব বলে জানিয়ে দিচ্ছি।
টিকা নিতে আসা এক বাচ্চার স্বজন সীমা আক্তার নামে বলেন, আমি আমার বোনের বাচ্চা নিয়ে আসছি। এসে দেখি আজ সব গুলো টিকা দেওয়া হবে না। পরে কবে আসবে তাও জানে না। বাচ্চা দের নিয়ে বারবার আসা খুব কষ্টকর।
জুয়েল নামে একজন বলেন, আমার সন্তানের বয়স দেড় মাস তাই আজ টিকা নিতে আসলাম কিন্তু সব টিকা নাই। একটা বাকি রেখেই আজ টিকা নিতে হলো।
জেলার ইপিআই তত্ত্বাবধায়ক একেএম মনিরুজ্জামান বলেন, জেলায় ১ মাসে গড়ে ৩ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হয়। জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল, পৌরসভা সহ বিভিন্ন জায়গায় এই টিকাকেন্দ্র রয়েছে।
জেলা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা মোহাম্মদ ফরিদ খান বলেন, টিকার ঘাটতির জন্য শিশুদের কোনো সমস্যা হবে না। নিয়ম অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে তিনটি করে টিকা দিতে হয়। এতে ভয়ের কিছু নেই।
সিভিল সার্জন ডা মুকছেদুল মোমিন বলেন, এই টিকা সারাদেশেই সংকট। টিকার চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে ফ্রেবুয়ারির মাঝামাঝি টিকা আসতে পারে। দেড় মাসের পর থেকে ২৩ মাসের মধ্যে টিকা নেওয়া যায়। তাই এতে অভিভাবকদের উদ্বিগ্নের কোন কারণ নেই।