পুলিশের ট্রলারের গিয়ারবক্স চুরি, আতঙ্কিত হরিরামপুরবাসী

Spread the love

আবিদ হাসান, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ।

গত একমাসে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বেড়েছে চুরি। উপজেলার বিভিন্ন বাজারের, দোকানে, গৃহ এমনকি বাদ যায়নি হরিরামপুর থানা পুলিশের ট্রলারের গিয়ারবক্স। এসব চুরির ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। উঠতি বয়সী যুবকেরা নেশার টাকা জোগাড় করতে এসব চুরির কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এছারাও আন্ধারমানিক বাজারে চুরি, আন্ধারমানিক খেয়াঘাটের নৌকা থেকে ডিজেল,মবিল চুরি, জেলেদের বাড়ি ও নৌকা থেকে জাল চুরি, অটো-হ্যালোবাইকের ব্যাটারী চুরি, বৈদ্যুতিক মটর এমনকি গৃহস্থালী থেকে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত একমাসে হরিরামপুর থানার আশেপাশে এমন চুরির ঘটনায় বেড়ে গেলেও পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এখনো কোন কার্যকরী ব্যবস্থা হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেছে অনেকেই।

দড়িকান্দি গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের শফিকুল ইসলাম জানান, ধারদেনা করে ৪৪টি মাছ ধরার জাল কিনেছিলাম। একেকটি জালের দাম ৩৫০০ টাকা। রাতের আধারে আমার ৪৪টি জাল চুরি হয়েছে। কে বা কারা নিয়ে গেছে, সেটা আমার সন্দেহের তালিকায় ৪জন থাকলেও প্রমানের অভাবে কিছু করতে পারছি না। আর যাদের কে সন্দেহ করি, তারা নিয়মিত মাদক খাদক। আমি ছারাও আমার এলাকার জয়ন্ত, লিটন, আজিজুল,তুষারসহ বেশকিছু জেলেদের জাল চুরি করেছে এই একই চক্র।  হাতেনাতে একদিন বাজারে প্রকাশ্যে বিচারও হয়েছিল। কিন্ত তারপর এই চোর গ্রুপ আরও বেপরোয়া হয়েছে। এছারাও পদ্মানদীতে চলাচলের জন্য থানার ট্রলার থেকেও গিয়ার বক্স চুরি হয়েছে বলেও শুনেছি।

খালপার গ্রামের চুন্নু জানান, গত কয়েকদিন পূর্বে আমার বাড়িতে অটো চার্জ থাকা অবস্থায় ব্যাটারি চুরি হয়। যেদিন চুরি হয়, সেদিন এই চোর চক্র পদ্মানদীর পাড়ের দোকান থেকে রাত আনুমানিক দুইটার দিকে দোকানির নিকট হতে সিগারেট কিনেছে বলে জেনেছি। তাছারা, এই চোর চক্র পদ্মানদীর পাড়ে দোকানদার মুন্নাফের দোকান থেকে ডিজেল, মবিল চুরি করে বিক্রয়ের সময় আন্ধারমানিক বাজারে হাতেনাতে ধরা পরে। তাছারা, কয়েকদিন আগে রফিক নামের মাঝির ট্রলার, ঘাটে ভিরে থাকা অবস্থায় তেল,পার্টস,মেশিন,নোঙরকরার গ্রাফিসহ বিভিন্ন টেকনিকে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। আবার সন্দেহের তালিকায় যারা আছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে তারা হুমকিও দেয় আমাদের। আর এই চক্র উঠতি বয়সি বেশিরভাগ নেশাগ্রস্থ।

স্থানীয় সচেতন নাগরিক জামিরুল জানান, পুলিশের অবহেলার কারণে এইসব চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। এমনকি পুলিশের ট্রলারে চুরি হলে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপার টা কোথায় এসে দারিয়েছে।

খালপাড় গ্রামের জয়নাল বলেন, গরিব মাইনষের বাড়ি চুরি ওইলে কেউ খোজ নেয় না। বড়লোকের বাড়ি চুরি ওইলে পুলিশ ছাল উঠাই দিতো।

হরিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মমিন খান জানান, থানার ট্রলারের গিয়ার বক্স খোয়া গেছে দেখেছি। গোপনীয় তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। সিংগাইর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, পুলিশের ট্রলারের গিয়ারবক্স চুরির ঘটনা আমি এই প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আমি থানায় খোজ নিয়ে দেখতেছি। আর চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা টহল জোরদার করতে হবে। এই বিষয়েও ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Scroll to Top